মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাদিজা আক্তার।যাকে নিয়ে আজ সর্বত্র আলোচনার ঝড়। যোগদানের পর থেকে বদলে গেছে মহেশপুরের চিত্র। মানুষের কাছে তিনি এখন কেবল একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নন, বরং আশার আলো।
খাদিজা আক্তার বর্তমানে একসঙ্গে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ তিনটি দায়িত্বে আছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মহেশপুর পৌরসভার প্রশাসক এবং ভূমি অফিসের এসিল্যান্ড। তিনটি দায়িত্বে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন নিরলস ভাবে।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইউএনও অফিসে গেলে এখন আর কারো সুপারিশের প্রয়োজন হয় না। সাধারণ মানুষ সরাসরি প্রবেশ করে নিজের সমস্যা জানাতে পারেন। শুনে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিচ্ছেন তিনি। কারও জমির কাগজপত্রের জটিলতা, কারও সামাজিক সমস্যা কিংবা অবৈধ দখল যে বিষয়ই আসুক, দ্রুত সমাধান করছেন এই কর্মকর্তা।
শুধু দপ্তরে বসে কাজ করাই নয়, তিনি নিয়মিত মাঠে ঘুরে বেড়ান। বাজার মনিটরিং থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ পরিদর্শন,মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, বাল্যবিয়ে রোধ, ভেজাল বিরোধী অভিযান সবখানেই তাঁর সক্রিয় উপস্থিতি। অনেক সময় হঠাৎ করেই কোনো গ্রামে গিয়ে জনসাধারণের সমস্যার কথাশোনের ও দ্রুত সমাধান করেন।
মহেশপুর পৌরসভার সাবেক কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা শওকত আলী জানান, আমরা ভাবিনি একজন ইউএনও একসঙ্গে এতগুলো কাজ এত সুন্দরভাবে সামলাতে পারবেন। মানুষের আস্থা ফিরে এসেছে শুধু তাঁর আন্তরিকতা আর স্বচ্ছতার কারণে।
ভূমি অফিসে দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও ভোগান্তির কথা সর্বজনবিদিত। সেখানে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দালাল চক্র প্রায় অদৃশ্য হয়ে গেছে। অনলাইনে দ্রুত খতিয়ান ও নামজারি নিষ্পত্তি হওয়ায় সাধারণ মানুষের স্বস্তি ফিরেছে।
অন্যদিকে পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে তিনি সড়ক সংস্কার, ড্রেন পরিষ্কার, বৈদ্যতিক সড়ক বাতির আলো , পৌর ট্যাক্স আদায়ে স্বচ্ছতা, এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এনেছেন।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, তাঁরা অনেক দিন পর এমন একজন কর্মকর্তা পেলেন, যিনি সত্যিকার অর্থেই জনগণের জন্য কাজ করছেন।
মহেশপুরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কর্মীরা বলেন, শিক্ষা, খেলাধুলা ও সংস্কৃতিতেও তিনি সমানভাবে মনোযোগ দিচ্ছেন। সম্প্রতি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় তিনি কিশোর অপরাধ ও মাদক নিয়ে কঠোর অবস্থান নেন।
খাদিজা আক্তারকে ঘিরে এখন একটাই প্রশ্ন এমন ইউএনও পেয়েছেন কখনো?
মহেশপুরের মানুষ বলছেন, দীর্ঘদিন পর একজন সত্যিকারের জনবান্ধব প্রশাসনিক কর্মকর্তা পেয়েছেন তাঁরা।