
মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধিঃ
গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পাথরা কিন্ডারগার্টেন স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। আধুনিক বিনোদনের ভিড়ে বিলুপ্তপ্রায় এই লোকজ খেলাকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।
লাঠিখেলাটি পরিচালনা করেন শওকত হোসেন এবং নেতৃত্ব দেন মো. শহিদুল ইসলাম। তার নেতৃত্বে প্রায় ২০ জন লাঠিয়াল অংশগ্রহণ করেন। খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিলেন ওদু ইসলাম, ইসা হোসেন, আতিয়ার রহমান, মোশাররফ হোসেন, ইদ্রিস আলী, রতন ও আহাদসহ স্থানীয় তরুণরা। পুরো মাঠজুড়ে দর্শকদের উচ্ছ্বাস আর করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পরিবেশ।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “আধুনিক বিনোদনের যুগে হারিয়ে যাওয়া লাঠিখেলা আমাদের পূর্বপুরুষদের ক্রীড়া ঐতিহ্যের প্রতীক। তরুণ প্রজন্মের মাঝে এই সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই এ আয়োজন করা হয়েছে।”
দর্শক মতিয়ার রহমান বলেন, “একসময় এ এলাকায় লাঠিখেলা খুব জনপ্রিয় ছিল। এখন তেমন দেখা যায় না। আজ দেখে পুরোনো দিনের স্মৃতি ফিরে পেলাম।”
মিকাইল হোসেন মাষ্টার জানান, “আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে, তাই এমন আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয়।”
লাঠিখেলার দলের অধিনায়ক শওকত হোসেন বলেন, “আমাদের বাপ-দাদার ঐতিহ্যকে আমরা এখনো বুকে লালন করি। যতদিন পারি, এই খেলাকে বাঁচিয়ে রাখবো।”
অন্যদিকে গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি নুরুল হোসেন আবেগভরে বলেন, “আমি এই স্কুলে দীর্ঘ চাকরিজীবনে অনেক খেলা দেখেছি, কিন্তু অবসরের পর এতদিন পরে এমন আয়োজন দেখে মন ভরে গেল।”
গ্রামীণ ঐতিহ্যের এই লাঠিখেলা স্থানীয় সংস্কৃতিপ্রেমীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেছেন—আগামী দিনগুলোতে নিয়মিতভাবে এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখা হবে।